গর্ভাবস্থায় সুস্থ ও ফিট থাকা একজন মায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ব্যায়াম শুধু শরীরকে সক্রিয় রাখে না, বরং প্রসবের প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করে, মানসিক চাপ কমায় এবং শিশুর জন্যও ইতিবাচ
প্রভাব ফেলে। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে—“গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম কি নিরাপদ?”
এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব:
কেন গর্ভাবস্থায় ফিটনেস জরুরি
প্রতিটি ট্রাইমেস্টারের জন্য নিরাপদ ব্যায়াম
একটি উদাহরণ ভিত্তিক সাপ্তাহিক রুটিন
সাধারণ ভুল ধারণা ও করণীয়
সঠিক ব্যায়াম গর্ভবতী মায়ের জন্য একাধিক উপকার বয়ে আনে:
অস্বস্তি কমায় – কোমর ব্যথা, ফোলাভাব ও ক্লান্তি কমে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে – হরমোনাল পরিবর্তনে আসা স্ট্রেস ও দুশ্চিন্তা কমায়।
প্রসবের প্রস্তুতি নেয় – শরীরকে আরও নমনীয় ও শক্তিশালী করে তোলে।
প্রসব-পরবর্তী সুস্থতা দ্রুত হয় – শরীর দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরে আসতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের অনুমতি নেওয়া উচিত। বিশেষ করে—
অস্বাভাবিক রক্তপাত হলে
উচ্চ রক্তচাপ বা জটিলতা থাকলে
মাথা ঘোরা বা তীব্র ব্যথা অনুভব হলে
একাধিক শিশুর গর্ভ থাকলে
হালকা হাঁটা
প্রেনাটাল যোগব্যায়াম
পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম (কেগেল)
শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন
হালকা ওজন বা রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড ব্যায়াম
সাঁতার বা ওয়াটার এরোবিক্স
ভঙ্গি ও ব্যালান্স উন্নত করার ব্যায়াম
হালকা স্ট্রেচিং (পিঠ ও কোমরের জন্য)
পেলভিক টিল্ট
স্বল্প সময়ের হালকা যোগ ব্যায়াম
দিন ১: ২০ মিনিট হাঁটা + পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম
দিন ২: প্রেনাটাল যোগব্যায়াম + হালকা স্ট্রেচিং
দিন ৩: রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড দিয়ে হালকা সার্কিট
দিন ৪: সাঁতার বা ওয়াটার এরোবিক্স (যদি সম্ভব হয়)
দিন ৫: আরামদায়ক হাঁটা + শ্বাস প্রশ্বাসের অনুশীলন
“ব্যায়াম করলে শিশুর ক্ষতি হয়” → সঠিক ব্যায়াম শিশুর সুস্থতায় সাহায্য করে।
“গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করলে প্রসব কঠিন হয়” → বরং ব্যায়াম শরীরকে আরও প্রস্তুত করে।
“শুধু বিশ্রামই যথেষ্ট” → হালকা মুভমেন্ট ও ব্যায়াম বিশ্রামের মতোই প্রয়োজন।
আরামদায়ক পোশাক পরুন
প্রচুর পানি পান করুন
শরীরের প্রতি সতর্ক থাকুন, ব্যথা অনুভব করলে থেমে যান
প্রশ্ন ১: গর্ভাবস্থায় HIIT করা কি নিরাপদ?
উত্তর: না, খুব হালকা মডিফাইড ভার্সন ছাড়া বাঞ্ছনীয় নয়।
প্রশ্ন ২: আগে ব্যায়াম না করলে কি এখন শুরু করা যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, তবে ডাক্তারকে জানিয়ে ধীরে শুরু করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় সঠিক ব্যায়াম শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি শুধু প্রসবের প্রস্তুতিই নেয় না, বরং মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয় এবং শিশুর জন্যও ভালো পরিবেশ তৈরি করে। তাই প্রতিদিন ১০–২০ মিনিটের হালকা ব্যায়াম আপনার সুস্থতা ও আনন্দময় গর্ভাবস্থার জন্য অপরিহার্য।